English Version
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০৭:০৮

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী আখের রস

অনলাইন ডেস্ক
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী আখের রস

শীত কিংবা গ্রীষ্ম যে কোন ঋতুতেই আখ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক শক্তির সঞ্চয় ও তৃষ্ণা নিবারণের খুব ভালো উৎস হলো আখের রস। এতে খনিজ, সামান্য পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন প্রভৃতি নানা উপাদান রয়েছে, যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এক গ্লাস আখের রস খেলেই ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।  এ কারণে আখের রসকে প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিঙ্কও বলা হয়। শুধু ক্লান্তি দূর করতে নয়, বরং ত্বক জন্যও এটি সমান কার্যকরী। খেতে মিষ্টি হলেও আখের রস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। আবার ওজন কমাতেও ভূমিকা রাখে এটি। আখের রসের আরও নানা গুণ রয়েছে। এগুলো নিম্নরুপ-

এনার্জির ঘাটতি দূর করে আখের রসে উপস্থিত সিম্পল সুগার বা সুক্রোস রক্তে মিশে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এনার্জির ঘাটতি দূর করে। তাই তো পেট খারাপের পর শরীরকে চাঙ্গা করে তুলতে আখের রস খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। ডায়াবেটিসে উপকারী আখের রস খেতে মিষ্টি হলেও তা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক কার্যকরী। এতে জিআই-এর পরিমাণ খুব কম থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত এই আখ খেতে পারেন। ওজন কমায় আখের রসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এমনকি কোলেস্টেরলের পরিমাণও কমিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এটি। ক্যান্সার প্রতিরোধ করে আখের রসে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ থাকে। যা ব্রেস্ট ক্যানসার এবং প্রস্টেড ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে সক্ষম। কাজেই ক্যান্সার থেকে বাঁচতে চাইলে নিয়মিত এই খাবারটি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। হৃদরোগ উপশম করে আখের রস হার্ট ভালো রাখার পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাক রুখতেও সাহায্য করে। এছাড়া শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের নিঃসরণ কমাতেও ভূমিকা রাখে এটি। হজমশক্তি বাড়ায় আখের রসে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাসিয়াম এবং ফাইবার রয়েছে। এটি খেলে কোষ্ঠ কাঠিন্যের সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি হজম শক্তিও বেড়ে যায়। একাধিক কেস স্টিড করে দেখা গেছে, আখের শরীরে উপস্থিত পটাশিয়াম হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ধীরে ধীরে গ্যাস-অম্বল এবং হজমের সমস্যা কমতে শুরু করে। এছাড়া ডিহাইড্রেশনের সমস্যাসহ পেটের ইনিফেকশন রুখতেও কার্যকারী ভূমিকা রাখে আখের রস। মুখের গন্ধ দূর করে আখের রসে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস। এই দুই খনিজ দাঁতকে মজবুত করার পাশাপাশি গন্ধ সৃষ্টিকারি ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দাঁতের ক্ষয় যেমন রোধ হয়, তেমনি দুর্গন্ধও কমে। প্রসঙ্গত, পুষ্টির ঘাটতির কারণে যদি মুখে গন্ধ হয়, সে সমস্যা মেটাতেও আখের রসের কোন বিকল্প হয় না বললেই চলে। হাড়ের রোগকে দূরে রাখে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকার কারণে নিয়মিত আখের রস খলে হাড়ের শক্তি বাড়ে। ফলে বুড়ো বয়সে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। এই কারণেই নারীদের বেশি করে আখের রস খাওয়া উচিত। কারণ ৪০-এর পর থেকে বেশিরভাগ মেয়েদেরই শরীরেই ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে হাড়ে ক্ষয়সহ একাধিক রোগ ঘাড়ে চেপে বসার সুযোগ পয়ে যায়। লিভারের ক্ষমতা বাড়ায় এক গ্লাস আখের রসে অল্প করে লেবুর রস মিশিয়ে যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে জন্ডিসের প্রকোপ তো কমেই, সেই সঙ্গে লিভার ফাংশনেরও উন্নতি ঘটে। ত্বকের জন্য উপকারী আখের রসে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড থাকায় তা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। মুখের ব্রণ, বলিরেখা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এটি। আখের রস যদি মুখে মাস্ক হিসেবে লাগিয়ে রাখা যায় তাহলে ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়ে যায়। সেইসঙ্গে ত্বক হয়ে উঠে আরও বেশি উজ্জ্বল ও সতেজ। এছাড়া ঠাণ্ডা-জ্বর, গলায় ক্ষত প্রভৃতি সারাতে সাহায্য করে আখের রস। কাজেই সুস্থ থাকতে নিয়মিত আখের রস পান করুন। সাধারণত আখের কাঁচা রসটাই আমরা পান করে থাকি। তবে চাইলে এর সঙ্গে একটু লেবু, আদা কিংবা ডাবের পানিও যোগ করতে পারেন। এতেও উপকার পাবেন।