English Version
আপডেট : ১৬ আগস্ট, ২০১৭ ১২:৩১

বন্যায় সুস্থ থাকতে করণীয়

অনলাইন ডেস্ক
বন্যায় সুস্থ থাকতে করণীয়

নদী মাতৃক দেশ হওয়ার কারনে বাংলাদেশে ঘন ঘন বন্যার প্রবনতা দেখা যায়। যদিও বন্যা প্রাকৃতিক দূর্যোগ তাই এর উপর মানুষের  নিয়ন্ত্রন থাকেনা। হ্যাঁ তবে বন্যা মোকাবেলায় ও পরবর্তীতে পুনরুত্থানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন। এতে করে ক্ষয়ক্ষতির হাড় কমাতে পারবেন না কিন্তু আধিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে পারবেন। এতে করে আপনার মূল্যবান জীবন বেঁচে যাবে। রোগের পাশাপাশি বন্যা চলাকালীন বা পর্বরতীতে বিষাক্ত পোকামাকড় ও  সাপের কামড়ের কবলে পরতে হয়।

বন্যার সময় সবচেয়ে বড় সমস্যা হয় বিশুদ্ধ পানি নিয়ে। যার ফলে দেখা দেয় পানি বাহিত নানান রোগ। ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডীস, চুলকানি ইত্যাদি সহ নানা রোগ সৃষ্টি হয়। এসব রোগ আপনাকে শুধু অসুস্থ করাতেই সক্ষ্যম নয় বরং আপনাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিবে। কারন পানিবাহিত রোগ অনেক ভয়ানক যা সোজা আপনার যকৃতকে আক্রান্ত করে।

বন্যায় যেসব রোগের সম্মুখীন হতে হয় ও প্রতিকার

বন্যা চলাকালীন ও পরে পানি বাহিত রোগঃ বন্যার সময় পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায় যেমন- ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড, জন্ডিস ও কৃমি সংক্রমণ। বন্যার সময় মল পানিতে মিশে একাকার হয়ে খাবার পানি দূষিত করে এসব রোগের কারণ ঘটায়। পানিবাহিত রোগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয় ডায়রিয়া।

বন্যা চলাকালিন ও পর্বতীতে চোখ উঠলে করনিয়ঃ বন্যার সময় ও পরে চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হন অনেকেই। এটা হয় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে। চোখ ওঠলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ৪-৮ ঘণ্টা পরপর অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ করতে হবে। কোনো ড্রপ একবার ব্যবহার করলে অন্য কেউ তা ব্যবহার করবেন না। পরিষ্কার হাতে পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করুন। অপরিষ্কার হাত চোখে লাগাবেন না। ঘুমানোর সময় যে চোখ উঠেছে সেই কাতে ঘুমান

বন্যার সময় ব্যাঙ সাপ ও বিষাক্ত পোকামাকড় থেকে বাঁচার উপায়ঃ বন্যার সময় পানি ঘরের কাছে কোলে আসে। তখন সাপ, ব্যাঙ এবং বিষাক্ত পোকামাকড় ঘরের আশেপাশে এমনকি ঘরে এসেও আশ্রয় নেয়। এদের দংশনে আহত এবং  প্রাণহানির সম্ভাবনা থাকে। তাই বন্যার সময় ঘরের চারপাশে পোকামাকড় মারার ওষুধ ছিটিয়ে দিতে হবে।

কার্বলিক সাবান কেটে টুকরো টুকরো করে ঘরের চারদিকে চড়িয়ে দিতে হবে। অথবা কার্বলিক এসিডের ছিপি খুলে ঘরের কোনে রাখতে হবে।  এতে ঘরে সাপ ঢুকবে না। ঘরের চারপাশে পানি এলে ঘরের বেড়ার ধার ঘেঁসে ওষুধ ছিটাতে হবে। এতে ব্যাঙ ও বিভিন্ন রকম বিষাক্ত পোকামাকড় ঘরে ঢুকতে পারে না। যে কোনো ওষুধের দোকানে এগুলো কিনতে পাওয়া যায়। তবে এ সব ওষুধ যেন সবসময় বাচ্চাদের নাগালের বাইরে থাকে সে দিকে অবস্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। বন্যার সময় কৃমি সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায়ঃ বন্যার সময় কৃমি সংক্রমণ এবং পেটের অসুখ বেড়ে যায়। কৃমিনাশক ওষুধ এলবেনডাজল ৪০০ মিঃ গ্রাঃ এর ১ বড়ি রাতে চুষে খেয়ে নিবেন বাড়ির সবাই ছোট শিশু বাদে। সব সময় পানির সংস্পর্শে থাকার জন্য হাতে পায়ে স্যাঁত স্যাঁতে ফাংগাস জাতীয় চর্মরোগ হতে পারে। এ সমস্যা এড়াতে হলে গায়ে ভিজা কাপড় রাখবেন না, হাত পা ভাল করে ধুয়ে শুকনা কাপড়ে মুছে রাখবেন।

বন্যার সময় রোগ ব্যাধি মোকাবেলায় করনীয়

খাবার সব সময় ঢেকে রাখতে হবে। মশা-মাছি, কলেরা ও ডায়রিয়া রোগের জীবানু ছড়ায়। খাবার ঢেকে রাখলে কলেরা ও ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। পচা বা বাসী খাবার খাওয়া যাবে না। এতে ডায়রিয়া হতে পারে। ডায়রিয়া হলে খাবার স্যালাইন খেতে হবে। খাবার আগে হাত ভালো করে সাবান বা ছাই দিয়ে ধুতে হবে। পায়খানার পর হাত ভালো করে সাবান অথবা ছাই দিয়ে ধুতে হবে। কখনোই বন্যার পানি বিশুদ্ধ না করে পান করা যাবে না।