English Version
আপডেট : ১৭ অক্টোবর, ২০১৭ ১৬:৫০

শাকিব খানের জন্য বউ চলে গেল রাজমিস্ত্রির!

অনলাইন ডেস্ক
শাকিব খানের জন্য বউ চলে গেল রাজমিস্ত্রির!

শাকিব খানের নাম্বার দাবি করে দিনরাত ফোন দিয়ে শাকিবের সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন। অনেক যুবতী ভক্তরা চলে আসছেন বাড়িতে, শাকিব খানকে যাছাই করতে। এতে অতিষ্ঠ ইজাজুলের জীবন। মহাবিড়ম্বনায় শেষ পর্যন্ত নিজের বউকে পর্যন্ত হারাতে বসেছেন রাজমিস্ত্রি দিনমজুর ইজাজুল মিয়া (২৫)।

ইজাজুল বলেন, ‘আমি একজন দিনমজুর। সারাদিন কাজ করে ক’টাকা আর রোজগার করি। সারাদিনে অন্তত ২-৩শ’ ফোন আসে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে কে আমাকে কাজ দেবে। মা-বাবাও ত্যাগ করেছে, বউও চলে গেছে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে। অনেক চেষ্টা করেও তাকে বুঝাতে পারিনি। এখন আমাদের এলাকার মুরুব্বিরা লেগেছেন তার ভুল ভাঙ্গানোর জন্য।’

সিনেমার নায়ক-পরিচালকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‌‌‘রাজনীতি সিনেমায় আমার নাম্বারটি দেয়া হয়েছে শাকিব খানের নাম্বার হিসেবে। পুরো নাম্বারটি প্রকাশ হওয়ায় সবাই আমাকে কল দিচ্ছে। ছবিতে দেয়ার আগে তাদের অবশ্যই জানা উচিত ছিল এটি কার নাম্বার। দায়িত্বশীল হয়ে দেয়া উচিত ছিল। আমিও নায়ক শাকিব খানের একজন ভক্ত। কিন্তু এখন আমার যে বিড়ম্বনা হচ্ছে তার দায় কে নেবে।’

রাজমিস্ত্রি ইজাজুলের বাড়ি হবিগঞ্জের বানিয়াচং গ্রামে। মহাজনের সঙ্গে তার কাজ। মাস শেষে রোজচুক্তির বেতন একবারে নেন। একদিন মহাজন তাকে ডাকলেন। বললেন, ‘তোমার এত ফোন আসে কেন? অন্যরা বিরক্ত হয়ে যায়। তুমি অন্য জায়গায় কাজ দেখো।’

ঈদের সময় তিন হাজার টাকা জমা হয়েছিল। সে টাকাটা না নিয়েই সেখান থেকে বিদায় নিতে হয় ইজাজুলকে। ইজাজুল বলেন, ‘আমার পাশের সব মিস্ত্রিরা খুবই বিরক্ত হয়। এছাড়া যেখানে কাজ করতাম সেখানের লোকও বিরক্ত। তাই কাজটা ছেড়ে দিতে হয়েছে। আর একা একা রাজমিস্ত্রির কাজ পাওয়াটা কঠিন। এখনও মহাজনের সে টাকাটা পাইনি।’

তারপর অনেকদিন পর বুঝতে পারেন হাজার হাজার ফোনের কারণ। ইজাজুল বলেন, এলাকার এক ছেলে আমাকে বিষয়টি খুলে বলে। জানায়, শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস অভিনীত ‘রাজনীতি’ ছবিতে নাকি আমার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। যেখানে শাকিব খান অপুকে আমার নম্বর দিচ্ছেন। আর সবাই এটা শাকিব খানের নম্বর ভেবে আমাকে ফোন দিচ্ছেন।’

ঘটনার সূত্রপাত মূলত বুলবুল বিশ্বাস পরিচালিত ‌‌‘রাজনীতি’ ছবির মাধ্যমে। যেখানে পরিচালক অনুমতিবিহীন তার নম্বরটি ব্যবহার করেছেন। ছবি মুক্তির পর থেকেই বিড়ম্বনার মধ্যে দিন কাটছে ইজাজুলের ।

ইজাজুল জানান, ‘আমি শাকিব খান কি-না তা যাচাই করার জন্য তানিয়া নামে এক যুবতী কিছুদিন পূর্বে খুলনা থেকে হবিগঞ্জ চলে আসেন। মা-বাবাকে না জানিয়েই তিনি এসেছেন বলে জানিয়েছেন। পরে তাকে গাড়িতে তুলে বিদায় দিয়েছি। এই খবর শুনে আমার বউ রাগ করে। তাকে কিছুতেই বোঝাতে পারিনি। এই অবস্থায় দিন পার করছি।’

খবর নিয়ে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলা সদরের যাত্রাপাশা গ্রামের বাসিন্দা মোবারক মিয়ার ছেলে ইজাজুল মিয়া। তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী বাদল মিয়ার সিএনজি অটোরিকশা চালক ছিলেন এবং পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।

এদিকে স্বামী নিজেকে নায়ক শাকিব খান পরিচয় দিয়ে পরনারীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন সন্দেহে স্ত্রী মিশু আক্তার বাপের বাড়িতে চলে যান ১৬ মাস বয়সী একমাত্র শিশু কন্যা ইমুকে নিয়ে। কোনভাবেই তাকে বুঝাতে পারেননি ইজাজুল। পরে সিনেমা দেখে মিশুর ভুল আংশিক ভাংলেও এখনও ফিরেননি তিনি। অপরদিকে দিনে প্রায় ৭/৮শ’ ফোন আসার কারণে ইজাজুলের মোবাইল ব্যস্ত থাকে সারাদিন। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যবসায়ী বাদল তার সিএনজি অটোরিকশা চালকের চাকরি থেকেও বাদ দিয়েছেন।

সবকিছু হারিয়ে শাকিব ভক্তদের মোবাইল ফোনে অতিষ্ট হয়ে অবশেষে ইজাজুল গত ২৮ সেপ্টেম্বর বানিয়াচং থানায় রাজনীতি সিনেমার প্রযোজক আশফাক আহমেদ, পরিচালক বুলবুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন।

‘রাজনীতি’ ছবির সেই বিশেষ অংশটির ইউটিউব লিংক: