মেহেরপুর: বাছিরন নেছা বয়স ৬৫। এবার মেহেরপুরের হোগলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসিতে জিপিএ-৩ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিলে দিলেন। ওই বিদ্যালয়ের ছয়জন শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনিই সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট করেছেন। বাছিরন হোগলবাড়িয়া গ্রামের মৃত রহিল উদ্দীনের স্ত্রী।

পরীক্ষার ফল জেনে উচ্ছ্বাসিত বাছিরন বলেন, 'আমার দেখাদেখি অনেক ছেলে মেয়ে এখন লেখাপড়ার দিকে ঝুঁকছে। এটাই আমার বড় পাওয়া। আমি তো চাকরির জন্য লেখাপড়া করিনি।'

বছিরন জানান, ছোট বেলায় লেখাপড়া করতে না পারায় তার মনে এক ধরনের অপূর্ণতা ছিল। সেই অপূর্ণতা কাটলো। এইভেবে ভালো লাগছে তার। গর্ববোধ করছেন।

প্রাথমিক পাস তো হলো, এবার আরো এগুনোর পালা। বছিরন বলেন, 'মাধ্যমিকে ভর্তি হব। ভাবতে আনন্দিত হচ্ছি।'

হোগলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, 'বাছিরন নেছার লেখাপড়া নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা যেমন উৎসাহ দিয়েছেন আমরাও সামর্থ অনুযায়ী পরিচর্যা করেছি। তার সাফল্যে আমরাও গর্বিত।'

তিনি আরও বলেন, 'এখন এলাকার কোনো ছেলে-মেয়ে বিদ্যালয়ে না যাওয়ার কথা ভাবতে পারবে না। কারণ সবার কাছে উদাহরণ বাছিরন।' 

বাছিরন নেছার ছেলে আকবর আলী ও মহির উদ্দিন জানান, অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার কারণে তাদের মা স্কুলে যেতে পারেননি। লেখাপড়ার প্রবল ইচ্ছা ছিল তার। এ বয়সে বিদ্যালয়ে যাওয়া নিয়ে অনেকেই নানা কথা বলেন। তাদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন তাদের মা।

এদিকে 'দাদি বাছিরন' ভাল ফল করায় লজ্জা পাচ্ছেন তার অনেক সহপাঠী। 

গাংনী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আকবর আলী বলেন, 'মানুষ যেকোনো বয়সে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। ৬৫ বছরের বাছিরন নেছা পিএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে। তিনি এখন শুধু গাংনী উপজেলা নয়; সারা দেশের অনুপ্রেরণা। আমরাও তার জন্য গর্বিত।'