English Version
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ১৭:২২
কলেজছাত্রকে নির্যাতন

রাজাপুর থানার ওসিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজাপুর থানার ওসিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কলেজছাত্রকে শারীরিক নির্যাতন ও মিথ্যা চুরির মামলায় আসামি করে হয়রানির অভিযোগে ঝালকাঠির রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াসসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা ও এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। 

সোমবার দুপুরে ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে নির্যাতিত কলেজছাত্র মোহাম্মদ ইমরান হোসেন আদনান বাদী হয়ে এ মামলা করে। আদালতের বিচারক রুবাইয়া আমেনা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। ওই দিন আদেশ দেওয়া হবে বলেও বাদীর আইনজীবী খান শহিদুল ইসলাম জানান।

আসামিরা হলেন- রাজাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক সঞ্জীবন বালা ও রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আবুল খায়ের মাহামুদ রাসেল। মামলার বিবরণে জানা যায়, রাজাপুর উপজেলার টিঅ্যান্ডটি সড়কের এলাকার মৃত শাজাহান আলীর ছেলে স্থানীয় বড়ইয়া ডিগ্রি কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ ইমরান হোসেন আদনানকে গত ৭ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে থানায় ডেকে পাঠান ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস। পরে আদানান থানায় আসলে চোর বলে আখ্যায়িত করেন ওসি। একটি চুরি মামলায় জোরপূর্বক তার স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয় তাকে। এতে রাজি না হওয়ায় ওসির কক্ষে আটকে আদনানকে বেধরক পেটায় পুলিশ। 

ওসিকে সহযোগিতা করেন এসআই নজরুল ইসলাম ও এএসআই সঞ্জীবন বালা। মারধরের একপর্যায় আদনান জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. আজম তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য বলেন। 

আহত আদনানকে বরিশাল নেওয়া হচ্ছে, এমন খবর ওসির কাছে পৌঁছালে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবুল খায়ের মাহামুদ রাসেলকে ম্যানেজ করেন। পরে ডা. রাসেল অসুস্থ্য আদনানকে বরিশাল না পাঠিয়ে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ভর্তি করেন। ফলে আদনানের সুচিকিৎসা হয়নি। একদিন ৮ ডিসেম্বর স্থানীয় শিক্ষক ওয়ালিউর রহমানের বাসায় চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি দেখিয়ে রাজাপুর থানা পুলিশ আদনানকে আদালতে সোপর্দ করেন। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জেলখানায় সে হাসপাতালে ছিল। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি মুক্তি পায়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৪ জানুয়ারি থেকে টানা ছয়দিন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয় আদনান।

এ ব্যাপারে রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, আদনানকে আটক করার পর থেকেই সে অসুস্থ্য থাকার অভিনয় করেছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করাও হয়নি, মারধরের প্রশ্নই আসে না। ঘটনার পর থেকেই তার পরিবার মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করছে। এছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।