English Version
আপডেট : ২৭ নভেম্বর, ২০১৭ ১০:০৮

মুঠোফোন ইহুদিদের তৈরি বিধ্বংসী মারণাস্ত্র : আল্লামা শফী

অনলাইন ডেস্ক
মুঠোফোন ইহুদিদের তৈরি বিধ্বংসী মারণাস্ত্র : আল্লামা শফী

মুঠোফোনকে ‘ইহুদিদের তৈরি বিধ্বংসী মারণাস্ত্র’ আখ্যায়িত করে সন্তানদের এ থেকে দূরে রাখার নসিহত দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী। চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ মাঠে দুই দিনের শানে রিসালাত সম্মেলনের শেষ দিন সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ইহুদিরা আমাদেরকে ধ্বংস করার জন্য মোবাইলিজম নামক বিধ্বংসী মারণাস্ত্র ছড়িয়ে দিয়েছে; যা আমাদের পুরো সমাজব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছে। আমি আপনাদের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি, আপনারা ছেলে-মেয়েদের মোবাইল থেকে দূরে রাখুন।’

হেফাজত আমির আরো বলেন, “বর্তমান সমাজের যে অবস্থা, তাতে মানুষের মানবিক ও নৈতিকতা বোধের ‘চরম অবক্ষয়’ দেখা দিয়েছে। ‘নাস্তিক্যবাদী চেতনা প্রচারের কারণে’ সমাজে ইসলামবিদ্বেষী মনোভাবের লোক দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আল্লাহ ও রাসুল (স.)-এর অবমাননাকারী নাস্তিকদের শাস্তির বিধান কায়েম করা হলে নাস্তিক তৈরি হবে না। বাংলাদেশের জমিনে ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকদের শাস্তির বিধান অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।”

কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম তিন বছর আগে ঢাকার মতিঝিলে সমাবেশ থেকে ব্যাপক তান্ডব চালিয়ে আলোচনায় আসে। ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের বিরুদ্ধে মাঠে নামা সংগঠনটি ওই বছরের ৫ মে ‘নাস্তিক’ ব্লগারদের শাস্তি ও নারীনীতি বাতিলসহ ‘বিতর্কিত’ ১৩ দফা দাবিতে মতিঝিলে সমাবেশ ডেকে সংশ্লিষ্ট এলাকাসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক তান্ডব চালায়, সংঘাতে নিহত হন বেশ কয়েকজন।

সুপ্রিম কোর্টের সামনে রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’ আদলে স্থাপিত ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে ফের মতিঝিলে সমাবেশের হুমকি দিয়ে চলতি বছর আবার আলোচনায় আসে হেফাজত। এরপর গণভবনে কওমি মাদরাসাগুলার শীর্ষ প্রতিনিধি এবং শাহ আহমদ শফীর উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য সরানোর পক্ষে বলেন। এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ সনদকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সমান ঘোষণা করেন। সরকারের পক্ষ থেকে তখন আহমদ শফীকে ‘রাষ্ট্রের আধ্যাত্মিক মুরব্বি’ অভিহিত করা হয়।

শানে রিসালাত সম্মেলনে শফী বলেন, “হেফাজতে ইসলাম একটি ‘আধ্যাত্মিক ও আত্মসংশোধনমূলক’ সংগঠন, ‘সার্বজনীন অরাজনৈতিক’ একটি প্লাটফর্ম। কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্য হেফাজতের নেই। কারো সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক স্বার্থভিত্তিক বন্ধুত্ব বা শত্রুতা নেই। কোনো নির্বাচনে হেফাজত কাউকে মনোনয়ন বা সমর্থন দেবে না।” তবে ‘রাজনৈতিক ইস্যুর আড়ালে ইসলামকে টার্গেট করা’ হলে সর্বস্তরের মুমিন মুসলমান জনতাকে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন বলে হুশিয়ার করেন ৯৫ বছর বয়সী শাহ আহমদ শফী।

গত শনিবার সম্মেলনের চারটি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা মুহাম্মদ নোমান ফয়জী মেখল, মাওলানা মুহাম্মদ শফি বাথুয়া এবং মাওলানা ইসহাক মেহেরিয়া মাদরাসা। মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী ও হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সালের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য দেন আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী, মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী, মাওলানা আজিজুল হক আল মাদানী, মাওলানা আ ফ ম খালেদ হোসেন, মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা মুফতি মাহমুদ হাসান প্রমুখ।

হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সম্মেলনে হেফাজত আমিরসহ অন্য নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানানো হয়।