দিনাজপুরে পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত, সারা দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে আজ শুক্রবারও দিনাজপুরে পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে দিনাজপুরের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। দিনাজপুর মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. রফিক জানান, দুই শ্রমিককে মারধরের বিষয়টি এবং বাসে হামলার ক্ষতিপূরণ না পাওয়া পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। এদিকে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বানে গত বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ট্রেনের উপর চাপ বেড়েছে।
দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার নার্গিস প্রামাণিক জানান, বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ট্রেনেই ভিড় করছে। এতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। পরিস্থিতি নিরসনে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপর দেড়টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে একটি সমাঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং দিনাজপুর মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম সাংবাদিকদের জানান, ছাত্র-শ্রমিক দ্বন্দ্ব ও বাসে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হবে।
তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির ক্ষতিপূরণ ও শ্রমিককে মারধরের বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছে মোটর পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠন। তারা ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন। অপরদিকে বৈঠকে জেলা প্রশাসক যে প্রস্তাব দিয়েছে, তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার প্রফেসর ড. সফিউল আলম। তিনি জানান, তদন্তের মাধ্যমেই প্রকৃত দোষীকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি আরো জানান, জেলা প্রশাসকের প্রস্তাব অনুযায়ী ছাত্রদের মহসড়কে অবরোধ তুলে নিতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবাহী একটি বাসের সঙ্গে তৃপ্তি পরিবহনের একটি বাসের সাইড দেয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছাত্ররা মোটর পরিবহন শ্রমিকদের মারধর করে ও বাস ভাংচুর করে। এ সময় শ্রমিকরাও পাল্টা আক্রমণ করে। এতে দুই শিক্ষার্থী ও তিনি শ্রমিক আহত হয়।