বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে কমে গেছে পর্যটক
গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনিসংহ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে প্রতিনিয়ত যানজটের প্রভাব পড়ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। বর্তমানে সাফারি পার্কে পর্যটক সংখ্যা অন্য সময়ের তুলনায় অর্ধেকেরও কম হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহাবুদ্দিন জানান, গত প্রায় দুই মাস ধরে সাফারি পার্কে এমন অবস্থা বিরাজ করছে। বিশেষ করে অতিবর্ষণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে চান্দনা-চৌরাস্তা এবং ঢাকা বাইপাস সড়কের ভোগড়া মোড় থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ি সফিপুর, মৌচাক, চন্দ্রা ও আশপাশের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ায় এবং স্থানে স্থানে পানি জমে যানবাহন চলাচল বিঘি্নত হচ্ছে। এতে করে ওইসব পথে প্রতিনিয়তই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। আধা ঘণ্টার পথ অতিক্রম করতে দুই-তিন ঘণ্টা সময়ও লেগে যায়।
অনেক ক্ষেত্রে পর্যটকদের পথেই সময় কেটে যায়। পর্যটকরা পার্কে পেঁৗছাতেই বন্ধের সময় হয়ে যায়। এতে পার্কে আসার উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন পর্যটকরা। এমতাবস্থায় দৈনিক পর্যটক সংখ্যা হচ্ছে গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার। অন্য সময় (ছুটির দিন বাদে) এ সংখ্যা থাকে পাঁচ-ছয় হাজারের মতো।
মঙ্গলবার ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে গাজীপুরের সাফারি পার্কে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আসা আলী আকবর জানান, সকাল ৮টায় বাসা থেকে রওনা হয়ে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পার্কে পেঁৗছিয়েছি। বিশেষ করে টঙ্গীর পর থেকেই চান্দনা-চৌরাস্তা পর্যন্ত তীব্র যানজটে পড়ি। আধা ঘণ্টারও কম সময়ের এ পথ অতিক্রম করতেই লেগেছে প্রায় ৩ ঘণ্টা।
সালনা হাইওয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ হোসেন সরকার বলেন, অতি বর্ষণে গাজীপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সিংহভাগ অংশই নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া কোনাবাড়িতে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের কাজের জন্য এক লেনে গাড়ি চলতে গিয়ে ওইপথে অনেক সময়ই যানজট হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতের জন্য গাজীপুরের সড়ক ও জনপথে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু এখনো প্রতিকার হয়নি।
একই কথা বললেন, নাওজোর হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল হাই। অতি বর্ষণে বৃষ্টির পানি আটকে স্থানে স্থানে রাস্তার বিটুমিন উঠে গিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী-চান্দনা অংশে খানাখন্দক সৃষ্টি হয়েছে। গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সাময়িক মেরামত করলেও তা বেশিদিন থাকছে না।
গাজীপুর সড়ক জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিন রেজা বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে চান্দনা-চৌরাস্তা পর্যন্ত অংশে ২৯টি ফিডার রোডে ভারী গাড়ি টার্ন নিতে গিয়ে ওই অংশে প্রতিনিয়ত যানজট হচ্ছে।
অতি বর্ষণের সময় মহাসড়কের পানি সরিয়ে দিতে পাশে কাঁচা ড্রেন করে দেয়া হয়েছে। এ মহাসড়কে ৬০/৭০ টন পণ্য বহনকারী ভারি কভার্ডভ্যান সংখ্যা গত এক বছরে ৩০/৩৫ ভাগ বেড়ে গেছে।
এতে বর্ষাকালে নাজুক মহাসড়ক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এ ছাড়া মহাসড়কে বৃষ্টির পানির সঙ্গে দিন দিন কলকারখানা থেকে এসিডের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে রাস্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এসব রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে।