English Version
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১২:২৯

ফের বেড়েছে চালের দাম

অনলাইন ডেস্ক
ফের বেড়েছে চালের দাম

মোটা চালের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও মিনিকেট চালের দাম গত এক সপ্তাহে কেজিতে দুই টাকা করে বেড়েছে। আর পাইকারি বাজারেও বস্তা প্রতি ৫০-৬০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। চিকন চালের দাম বাড়ায় মোটা চালের দামও বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তাছাড়া পেঁয়াজের দাম কমেছে। এদিকে, সবজির বাজারে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজারে ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। কারওয়ান বাজারে চালের খুচরা বিক্রেতা বাচ্চু মিয়া জানান, বিভিন্ন মিলের মিনিকেট চালের দাম বস্তায় (৫০ কেজি) ১০০ টাকা করে বেড়েছে। ফলে চালের দাম কেজিতে দুই টাকা করে বাড়াতে হয়েছে।

তবে মিনিকেটের দাম বাড়লেও আরেক সরু চাল নাজিরশাইলের দাম কমার কথা জানিয়েছেন মহাখালী কাঁচাবাজারের জননী রাইস এজেন্সির ব্যবস্থাপক মো. মহিউদ্দিন হারুন। তিনি বলেন, রশিদের মিনিকেট চালের বস্তা এক সপ্তাহ আগে তিন হাজার ৫০ টাকা বিক্রি হলেও এখন তিন হাজার ১৫০ টাকা, মোজাম্মেলের মিনিকেটেও একই দাম বেড়েছে। মিনিকেট হিসেবে চিকন চাল মূলত মোজাম্মেল ও রশিদের মিল থেকেই আসে।খুচরা হিসেবে মিনিকেট চাল ৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, শুনেছি দাম আরো বেড়েছে। এর প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়বে।

সূত্রমতে, বাজারে তিন হাজার টাকা থেকে তিন হাজার ১০০ টাকায় বিভিন্ন মানের মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে। তবে আমদানি করা মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি বস্তা দুই হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার ৭০০ টাকায়। আর মোটা চালের মধ্যে রাব্বি-২৮ দুই হাজার ৪৫০ টাকা, তাজমহল বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৩৫০ টাকায়।

এদিকে, এখনো স্বাভাবিক পর্যায়ে না এলেও দাম কমতে শুরু করায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন ক্রেতারা। সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমায় বাজারে পর্যাপ্ত পণ্য আসছে। তাই কম দামে বিক্রি করা যাচ্ছে। বাজার ঘুরে জানা গেছে, কেজিপ্রতি দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৪২-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আর খুচরা বাজারে এ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৬৫ টাকা। রাজধানীর কোনো কোনো বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৭০ আর ভারতীয় ৬০-৬৫ টাকা। তবে এখনো রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে অনেক দোকানে দেশি পেঁয়াজ ৫৫ ও আমদানি করা ৫০ টাকায় করে বিক্রি করছেন দোকানিরা। কারওয়ান কাঁচাবাজারের পাইকারি বিক্রেতা রাব্বানী মিয়া বলেন, গত সপ্তাহের শেষ থেকেই আমদানি করা পেঁয়াজের আমদানি মূল্য অনেক কমে গেছে। ফলে আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারছি।

উল্লেখ্য, দেশে তিন দফা বন্যা ও পেঁয়াজ আমদানির প্রধান বাজার ভারতে বন্যায় পেঁয়াজের চাষ ব্যাহত হওয়ায় আশ্বিন মাসের শেষের দিকে দেশের বাজারে বাড়তে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। এরপর দফায় দফায় বেড়ে দেশি পেঁয়াজের দাম পৌঁছায় কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয় সেসময়।মসলা বাজার ঘুরে দেখা যায়, আদা ৯০-১০০ টাকা, মরিচ ৮০ টাকা এবং রসুন ১২০ টাকায় কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া মশুরের ডাল কেজিপ্রতি ১০০-১১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

অন্যদিকে, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে আসা রাজধানীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ক্রেতারা সবজির বাজারে স্বস্তি পেয়েছেন। দাম না কমলেও গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও একই দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে, সরবরাহও পর্যাপ্ত।

প্রতিকেজি বেগুন ৪০ টাকা, শিম ৪০, পেঁপে ২০, মুলা ১৫, টমেটো ৪০, কাঁচামরিচ ৮০, শসা ৪০, গাজর ৪০, আলু ২০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৪০, প্রতিটি বাঁধাকপি ও ফুলকপি ২০-২৫, লালশাক, পালংশাক ও ডাঁটাশাক দুই আঁটি ১৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২০০-২৫০ টাকা, কাতলা ২৫০-৩০০ টাকা, চিংড় ৫০০ টাকা, চাষের কই ২০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৫০ টাকা, দেশি ছোট শিং মাছ ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আকারভেদে প্রতিটি ইলিশ বিক্রি ৪০০-৮০০ টাকা পর্যন্ত।

আর মাংসের বাজারে তেমন পার্থক্য দেখা যায়নি আগের সপ্তাহের সঙ্গে। গরুর মাংস ৪৫০-৪৭০ টাকা, খাসির মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ টাকা এবং পাকিস্তানি লাল মুরগি ১৭০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।