English Version
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০১৭ ১২:১২

৯০০ কোটি টাকা কর ফাঁকিঃ ৪ মোবাইল অপারেটরকে চূড়ান্ত নোটিশ

অনলাইন ডেস্ক
৯০০ কোটি টাকা কর ফাঁকিঃ ৪ মোবাইল অপারেটরকে চূড়ান্ত নোটিশ

সিম রিপ্লেসমেন্টের নামে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে দেশের চারটি বেসরকারি মোবাইল অপারেটকে চূড়ান্ত দাবিনামার নোটিশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সোমবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)-মূল্য সংযোজন কর শাখা এ দাবিনামা জারি করেছে। মূসক আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৫৫ এর উপধারা (৩) অনুযায়ী চূড়ান্ত দাবিনামা জারি ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

মোবাইল অপারেটর কম্পানীগুলি হলো, গ্রামীণফোন লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডকে । নোটিসে বলা হয়, মামলার প্রতিবেদন, কারণ দর্শানোর নোটিশ, প্রতিষ্ঠানের দাখিল করা সব তথ্য, প্রতিষ্ঠানের অসহযোগিতা, রিপ্লেসমেন্ট সিমের সব দলিল প্রদর্শনে ব্যর্থতা প্রমাণ করে চারটি মোবাইল অপারেটর আলাদাভাবে সিম রিপ্লেসমেন্টের নামে নতুন সিম ইস্যু করে মূসক আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩৭(২) লঙ্ঘন করে সম্পূরক শুল্ক ও মূসক হিসেবে এ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।

এ বিষয়ে এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, বকেয়া রাজস্ব পরিশোধে মোবাইল অপারেটরগুলো ব্যর্থ হলে আইনগত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হতে পারে। তিনি বলেন, মূসক আইনের চূড়ান্ত দাবিনামা অনুযায়ী মোবাইল কোম্পানিগুলো বকেয়া রাজস্ব পরিশোধ ও আপিল করতে তিন মাস সময় পাবে। এর মধ্যে আপিল করতে হলে বকেয়া রাজস্বের ১০ শতাংশ জমা দিতে হবে।

জানা গেছে, গ্রামীণফোন লিমিটেড সবচেয়ে বেশি ৩৭৮ কোটি ৯৫ লাখ ৩৭ হাজার ৮২০ টাকা ২২ পয়সা। বাংলালিংক ১৬৮ কোটি ৯১ লাখ ৪৯ হাজার ৫২ টাকা ৪৪ পয়সা, রবি ২৮৫ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার ৫৩৫ টাকা ৭ পয়সা এবং এয়ারটেল ৫০ কোটি ২৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩২২ টাকা ৫৯ পয়সা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।

এর আগেও চারটি মোবাইল অপারেটরকে পৃথকভাবে বকেয়া রাজস্ব পরিশোধ ও কারণ দর্শানোর জন্য চারটি প্রতিষ্ঠানটি নোটিশ জারি করা হয়। ওই সময় চারটি কোম্পানি কারণ দর্শানোর জবাব দিতে সময় চায়। কিন্তু কয়েক দফা সময় নিয়েও চারটি প্রতিষ্ঠান শুনানিতে অংশ নেয়নি।

এনবিআর সূত্রে জানাগেছে, বেসরকারি মোবাইল অপারেটরদের সিম রিপ্লেসমেন্টের নামে নতুন সিম বিক্রির মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি খতিয়ে দেখতে এনবিআর ২০১৩ সালের ২৮ জুলাই একটি নির্দেশনা জারি করে। নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর এলটিইউ (ভ্যাট) এর কমিশনারকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে।

পরে এনবিআরের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি এলটিইউ (ভ্যাট) এর অতিরিক্ত কমিশনারকে আহ্বায়ক করে চার মোবাইল অপারেটর, অ্যামটব ও বিটিআরসি’র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ৫ সদস্যের কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।

কমিটি চারটি মোবাইল অপারেটরের দাখিলপত্র যাচাই করে। সিম রিপ্লেসপেমেন্টের কর বিষয়ে এনবিআরের নির্দেশনা, ব্যাখ্যা ও বিটিআরসির গাইডলাইন অনুযায়ী এ খাত থেকে রাজস্ব আহরণে আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকায় এলটিইউ চারটি মোবাইল অপারেটরকে চিঠি দেয়। চিঠিতে সিম রিপ্লেসমেন্টের তথ্য যাচাইয়ে চারটি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চায় এলটিইউ। সিম রিপ্লেসপেমেন্ট থেকে রাজস্ব আদায় আদালতে মামলা রয়েছে বলে এলটিইউকে জানায় প্রতিষ্ঠানগুলো। পরে কমিটি সিম রিপ্লেসমেন্টের তথ্য প্রমাণসহ উপস্থাপন করতে আবার চিঠি দেয়। কিন্তু চারটি প্রতিষ্ঠান তা দেখাতে ব্যর্থ হয়।