English Version
আপডেট : ১৬ আগস্ট, ২০১৭ ০৬:৩৯

দুই দলেই একক প্রার্থী

অনলাইন ডেস্ক
দুই দলেই একক প্রার্থী

বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণতীরের জনপদ কেরানীগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ঢাকা-৩ (১৭৬-কেরানীগঞ্জ) আসন। দেশের অন্যান্য জনপদের মতোই এখানে বইছে নির্বাচনী হাওয়া।

আসনটিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির একক প্রার্থী রয়েছে। ঢাকার  দক্ষিণাঞ্চলের এই আসন থেকে ৫ম ও ৮ম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে এ আসন আওয়ামী লীগের দখলে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ চায় জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে এবং বিএনপি চায় আসনটি পুনরুদ্ধার করতে। সে লক্ষ্য নিয়েই চলছে জোর প্রস্তুতি। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেরানীগঞ্জের একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-৩ আসনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী নসরুল হামিদ বিপু। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে টানা দ্বিতীয় বারের মতো নির্বাচিত হন তিনি। এরপর তিনি বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এ আসনে এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন নসরুল হামিদ বিপু। কেরানিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই অংশে ভাগ থাকলেও দলীয় নেতাদের মধ্যে কোনো অন্তর্কোন্দল নেই। এ আসনটিতে নসরুল হামিদ বিপু ছাড়া দলের অন্যকোনো প্রার্থী নেই। দলীয় প্রতীকের প্রার্থী একমাত্র তিনি। অন্যদিকে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেতে পারেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বড় দুই দলের দুই হেভিওয়েট নেতা একই ইউনিয়নের বাসিন্দা। লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে। জানা গেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার এই আসনটি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এলাকাটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প-কারখানা এবং অর্থনৈতিক জোন হিসেবে পরিচিত। এই আসনে নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুই দলের শক্তিশালী প্রার্থীর মধ্যে। এ দুজনের রয়েছে পারিবারিক ঐতিহ্য। রয়েছে পৃথক ভোট ব্যাংক। পারিবারিকভাবেই নসরুল হামিদ বিপু একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তার প্রয়াত পিতা হামিদুর রহমান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। বাংলাদেশের প্রথম সংসদের নির্বাচিত এমপি ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন তিনি। এ ছাড়া বিপুর মা হাসনা হামিদও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তাদের অনুপ্রেরণায় নসরুল হামিদ বিপুর রাজনীতিতে হাতেখড়ি। তিনি স্থানীয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদ, পরবর্তীতে কেরানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং সর্বশেষ আওয়ামী লীগের বিগত কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন। ফলে সাংগঠনিকভাবে তার শক্ত অবস্থান রয়েছে কেরানীগঞ্জে। এ ছাড়া স্বচ্ছ ভাবমূর্তি থাকায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতাও অনেক বেশি। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করলেও দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন তিনি। নিয়মিত যান নির্বাচনী এলাকায়। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি দেখভাল করেন সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডও। অন্যদিকে এ আসনটিতে বিএনপির দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে তাকেই প্রার্থী করা হবে বলে দলটির বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, পঞ্চম থেকে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে কেরানীগঞ্জ আসনটি ছিল বিএনপির দখলে। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় নির্বাচনে প্রথমবারের ভোটের লড়াইয়ে তিনি পরাজিত হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী নসরুল হামিদ বিপুর কাছে। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি এ আসনে গয়েশ্বর রায়ই হবেন বিএনপির প্রার্থী। তবে আইনি জটিলতার কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে বিকল্প হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন তার মেয়ে বিএনপির প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়ন বিষয়ক সহসম্পাদক অপর্ণা রায়। তিনিও মনোয়ন চাইতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।