English Version
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ১২:৪৩

তিন ইস্যুতে দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে রাজনীতি, ফের সংঘাতের আশঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
তিন ইস্যুতে দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে রাজনীতি, ফের সংঘাতের আশঙ্কা

দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে দেশের রাজনীতি। নতুন ইসি, খালেদা জিয়ার মামলা এবং জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার এই তিন ইস্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গন ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে চলছে বাকযুদ্ধ। নেতাদের বক্তব্যে যে ধরনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে তাতে, যে কোনো মুহূর্তে দেশের রাজনীতি আবারো সহিংস কিংবা সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

 

বিশেষ করে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় দুই মামলায় (জিয়া অরফানেজ এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট) খালেদা জিয়ার (জেলে যাওয়ার মতো)সাজা হতে পারে এমন ধারণা এখন সবার মুখে মুখে। এমন কী বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মুখেও উচ্চারিত হচ্ছে একই সুর।

 

বেগম জিয়া জেলে গেলে তখন বিএনপি কীভাবে এবং কার নেতৃত্বে চলবে এ নিয়েও শুরু হয়েছে নানা অপ্রকাশ্য গুঞ্জন।

 

যদিও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, বেগম জিয়ার কারাগারে যাওয়ার মতো কোনো পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। আর বেগম জিয়া কারাগারে গেলে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।

 

অপর দিকে, আওয়ামী লীগের নেতারা দাবি করছেন বেগম জিয়াকে সাজা দেয়ার কোনো ইচ্ছা নেই আওয়ামী লীগের। তবে আমরা চাই দেশের বিচার বিভাগ যেন সুষ্ঠুভাবে তাদের বিচারিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে।

 

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বেগম জিয়াকে সরকারের শাস্তি দেয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। তবে এটি আদালতের বিষয়। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। আবার কেউ কেউ ভারতের তামিলনাডুর শশীকলার উদাহারণ টেনে বলছেন শশীকলার জন্য যেমন তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রীর পথ থেমে থাকেনি, খালেদা জিয়ার জন্যেও প্রধানমন্ত্রীর পথ পড়ে থাকবে না।

 

খালেদা জিয়ার জেলে যাওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে না দিয়ে এমন অঘটন ঘটলে তখন দল কীভাবে চলবে এরই মধ্যে নেতারা সে ধরনের আগাম প্রস্তুতিও নিয়ে রাখছেন। সেই সময়ে ৫ সদস্যের একটা কমিটি করা হতে পারে যাদের সমন্বিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দলের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। দলে যাতে বিভক্তি না ঘটে সেজন্য ওই সময় দলের প্রতিনিধিত্ব করবে জিয়া পরিবারেরই কেউ না কেউ বলে জানা গেছে দলের একাধিক সূত্র থেকে।

 

ওই সূত্র থেকে আরো জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির তিনজন সদস্য, একজন ভাইস চেয়ারম্যান, একজন উপদেষ্টা কিংবা প্রভাবশালী একজন যুগ্ম মহাসচিবের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের ‘আপদকালীন’ ওই কমিটি করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। যারা ওই সময় আন্দোলন হলে দলকে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবেন।

 

তবে রাজনীতির মাঠে নেতারা যাই বলুক না কেন, খালেদা জিয়ার জেলে যাওয়ার বিষয়টি একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিএনপির শীর্ষ নেতারা এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কেননা, সরকারের মোটিভ আগেই আঁচ করতে পারছেন তারা। তারা মনে করছে সরকার নির্বাচন নিয়ে প্রকল্প গ্রহণ করছে। তাদের ধারণা সরকার বিএনপি দলকে ভেঙ্গ ফেলে দিয়ে আবার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নিজেদের ইচ্ছামতো নির্বাচন কমিশন গঠন করে করেছে।এবিষয় নিয়ে বিএনপি থেকে কড়া সমালোচানও করা হয়ে।

 

এছাড়াও ই-ভোটিং নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবকে বিএনপি থেকে কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতি দেশে সৃষ্টি হলে আন্দোলনের ঘোষণাও দিয়েছে দলটি।

 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে তা জাতির জন্য দুর্ভাগ্য ডেকে আনবে। আমরা ভয়াবহ অবস্থার দিকে যেতে পারি। কারণ, যেসব দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়-সেসব দেশে সম্প্রীতি বজায় থাকে না, উগ্রবাদের বিস্তার ঘটে, সবকিছু ভেঙে পড়ে।

 

দেশের এই পরিস্থিতেতে জনমনেও রাজনীতিতে আবারো সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।